Posts

Showing posts from June, 2019

এত জাত-ফাত, ছুঁৎ-অচ্ছুৎ, ফর্সা-কালো, ধর্ম-অধর্মের ভেদাভেদ করে লাভটা কী হল?

এত জাতপাত, ব্রাহ্মণ-শূদ্র ছুঁৎ-অচ্ছুৎ, কে গরু খায় আর কে শুয়োর, কে ফর্সা, কে কালো, কে পৈতা পরে আর কে টুপি – এ নিয়ে নিরন্তর মারামারি, কাটাকাটি, দাঙ্গাদাঙ্গির পরে দিনশেষে কী জানা গেল? নাহ আমরা নাকি মূলত তিন ঐতিহাসিক গোষ্ঠীর শঙ্কর – যেভাবেই কড়ি গুনি না কেন, আমাদের জিনের ‘ষোল আনা’র বেশীরভাগই ভরেছে এই তিন দলের আনা-আনা অবদানে। কেউ কম, কেউ বেশী; অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে কেউ এর সাথে মিশ খেয়েছে বেশী, কেউ বা ওর সাথে। আমাদের, অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের মত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অধিবাসীদের উদ্ভব ঘটেছে এই তিন জনগোষ্ঠীর মিলনের ফলে – ৫০ থেকে ৭০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে এসে ভারতে বসতিস্থাপনকারী প্রাচীন শিকারি-সংগ্রাহক গোষ্ঠী, খ্রিস্টপূর্ব ৫-৭ হাজার বছর আগে পারস্য থেকে আসা ‘চাষাভুষা’ মানুষ আর তারপর খ্রিস্টপূর্ব ১-২ হাজার বছর আগে আফগানিস্তানের উত্তর থেকে আসা ‘পশুপালকদের’ দল। যাক বাবা, আমার ছোটবেলার পাড়ার খালাম্মাদের একটা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল এতদিনে, এত বড় বড় গবেষকদের কাজের ফলে! ওনাদের সেই হাহাকার, ‘আহারে আপা আপনার দুইটা মেয়ে কী সুন্দর ফর্সা, বড়টা কালো হইল ক্যাম

শেষ নাই যার

আমি ব্যাকরণবিদ নই। তবু ধারণা করি, জ্ঞাত হওয়া থেকে জ্ঞান শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। কোন কিছু জানাকে জ্ঞান বলে। সেটা ভাল হোক বা মন্দ হোক, সবই জ্ঞান। ব্যবহারিক পরিমণ্ডলে ভাল-মন্দের হিসাব নিকাশ আসে। জ্ঞান ভাল-মন্দ নিরপেক্ষ। কিভাবে এই জ্ঞানের জন্ম হয়? একজন দার্শনিক বা এপিষ্টেমোলজিস্ট তার জ্ঞানগর্ভ তত্ত্বালোচনার মাধ্যমে এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন। আমি দার্শনিকও নই। আমি এই প্রশ্নের জবাব দেবার চেষ্টা করবো নিজস্ব পঠন, অধ্যয়ন, চিন্তন ও অভিজ্ঞতার আলোকে। প্রকৃতি অসীম তথ্যের আধার। মানুষ যখন সেই তথ্যসমূহ নিজেদের জন্যে আহরণ করে কেবল তখনই তা জ্ঞানে পরিণত হয়। তারমানে সেই অর্থে প্রকৃতি জ্ঞানী নয়, শুধুমাত্র তথ্যের আধার। স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন আসতে পারে, মানুষ কখন প্রকৃতির তথ্যভাণ্ডার থেকে তথ্য আহরণ করে বা জ্ঞান আহরণ করে? মানুষের মস্তিষ্কে প্রকৃতি এমন কিছু বৈশিষ্ট্যের সন্নিবেশ ঘটিয়েছে, যার ফলে তাকে জ্ঞান আহরণ করা লাগে। মানুষের কৌতূহল, প্রয়োজন ও প্যাশান বা প্রেমই হলো সেইসব প্রকৃতি প্রদত্ত গুণপনা, যার কারণে সে জ্ঞানার্জনে সক্রিয় হয়। শুধু জ্ঞান অর্জন করলে বা কাঁচা তথ্য সংগ্রহ করলেই তা কাজের উপয

গোল্ডেনের চাপে আমাদের শিশুরা

Image
লিখেছেন: এম এম মেহেরুল ছেলেমেয়েদের, বিশেষত শিশু, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরতদের জন্য স্কুলব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাওয়া আনন্দের ব্যাপারই বটে। কিন্তু সেটা আর আনন্দময় থাকে না বিদ্যালোভী অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কারণে। তারা সকল শিশুকেই ‘আইনস্টাইন’ বানাতে চায়। ফলে বিদ্যাশিক্ষা শিশুর স্বভাব ধ্বংসকারী বোঝা হয়ে ওঠে। স্কুলব্যাগের বোঝাকে কেবল শারীরিক ক্লেশ দিয়ে বুঝালেই চলবে না। ওজনদার পাঠ্যবইয়ের বোঝা কেবল বহন করা নয়, পড়তেও হয়; বাড়িতে ফিরে ঘাড়মুখ গুঁজে একগাদা হোমওয়ার্কও করতে হয়। অর্থাত্, শুষ্কজ্ঞানের বোঝাও তাদের বয়ে চলতে হয়। ফলে জগিবিচ্ছিন্ন কলুর বলদের মতো তারা শারীরিক ও মানসিক উভয়বিধ যন্ত্রণাতেই কাতর হতে থাকে। পরিণতিতে, বড় হয়েও তারা বহির্জগতে একা চলতে অক্ষম থেকে যায়। এরূপ কৃত্রিম জ্ঞানবিদ্যাচর্চা নিয়ে সারাবিশ্বে সমালোচনা চলছে। ইউরোপে আজকাল কৃত্রিম স্কুলের বিপরীতে প্রাকৃতিক স্কুল ধারণা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আশার কথা হলো, বইয়ের বোঝা কমাতে সরকার নানাআইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে চললেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ঠিক “কাজীর গরু কাগজে আছে গোয়ালে নেই” এর মতো অবস্থা।অর্থ